দীর্ঘ ৫০০ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রামের ফসল হিসেবে বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের প্রাণ পুনরায় ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে। আগামী ২২জানুয়ারি এই মন্দিরের ভীত প্রতিষ্ঠা হবে। এ উপলক্ষে আনন্দঘন পরিবেশ বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিতে ভূমি পূজার প্রসাদ (অক্ষত চাউল) আমন্ত্রণ পত্র ও লিফলেট হস্তান্তর করছে ভারত।

বুধবার দুপুরে বেনাপোল চেকপোষ্টে ভারতের হিন্দু মহাজোটের পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নেতাদের কাছে ২০০ প্যাকেট প্রসাদ হস্তান্তর করেছে।

এ প্রসাদ বিনিময় দুদেশের মধ্যে সোহার্দ সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত রাখল। উভয় দেশ অসম্প্রদায়িক চেতনায় এগিয়ে যাবে এ আহ্বান জানান হিন্দু মহাজোটের নেতারা।

সীমান্তে এ সময় উভয় দেশের রাম জোটের নেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। ভারতের রাম মন্দিরের প্রসাদ পেয়ে খুশি বাংলাদেশের ভক্তরা।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট যশোর শাখা আহবায়ক অমল অধিকারী বলেন, ‘দীর্ঘ ৫০০ বছর পর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে রাম মন্দির। এটা হিন্দু জাতির গর্বের দিন। আর এ মন্দিরের প্রসাদ হাতে পেয়ে বাংলাদেশি হিসাবে গর্ববোধ করি। এর ফলে দু দেশের মধ্যে বাড়বে সম্প্রীতি’।

ভারতের পাঠানো এ প্রসাদ চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হবে বলেও জানান জোট নেতারা। বাংলাদেশে ৬৪টি জেলায় বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান অমল অধিকারী।

বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সভাপতি এ্যাডভোকেট গোরী চন্দ্র পরামানিকের কাছে এ প্রসাদ লিফলেট এবং আমন্ত্রণ পত্র পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান জোট নেতারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের পশ্চিম বঙ্গের এমএলএ শ্রী আশোক কীত্তনীয়া, হিন্দু মহাজোট বনগার নেতা গোবিন্দ্র ভট্টাচার্য্য, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট যশোর শাখার আহবায়ক অমল অধিকারী, ছাত্র মহাজোটের সাধারন সম্পাদক প্রান্তদাস,জয় দত্ত,সাংবাদিক দেবুল কুমার দাস,তাপস সরকারসহ জোটের নেতারা।

প্রসঙ্গত, মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাঁকি ১৫২৮ সালে অযোধ্যায় একটি মসজিদ তৈরি করেন, যা পরবর্তীতে বাবরি মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। ভারতের হিন্দুত্ববাদিরা দাবি করে রাম জন্মভূমিতে ‘রামের মন্দির ভেঙে’ এই মসজিদ তৈরির করা হয়েছিল। ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত কাঠামোয় রামলালার মূর্তি দেখা যায়। স্থানীয় ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের দাবি, রামলালা আবির্ভূত হয়েছেন। শুরু হয় রামলালার পূজা করার দাবি এবং তা নিয়ে আদালতের লড়াই।

১৯৮৬ সালে ফৈজাবাদ জেলা আদালতের নির্দেশে খুলে দেওয়া হয় রামলালার অস্থায়ী মন্দিরের তালা। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকদের হামলায় ধূলিসাৎ হয় বাবরি মসজিদ। ২০১৯ সালের নভেম্বরে টানা শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে বিতর্কিত জমির মালিকানার রায় মন্দিরের পক্ষে দেন।